জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ :: উন্মুক্ত পাশ করতে পারবে
আসসালামু আলাইকুম। শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি আপনারা সবাই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে কুশলেই আছেন। পোস্টের শিরোনাম দেখে বুঝতেই পারছেন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কলেজে (অনার্স) কোর্স এর ভর্তির জন্য বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
22/01/2024 ইং তারিখে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশেষত যারা জেনারেল শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা বোর্ড ও কারিগরী শিক্ষা বোর্ড হতে পাশ করেছেন শর্ত স্বাপেক্ষে কলেজ ভর্তি হতে আগ্রহী সবাই আবেদন করতে পারবেন। আসলে আজকের পোস্টের বিষয়বস্তু জেনারেলদের পাশাপাশি বাউবি (উন্মুক্তের) এর শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমার এই পোস্টটি ধৈর্য্য সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রাখছি তাহলে সহজেই বিষয়বস্তু বুঝতে পারবেন।
বাউবি হতে পাশ করা (উন্মুক্তের) শিক্ষার্থীদের জন্য দিক নির্দেশনা
বাউবির এমন অনেক শিক্ষার্থী আছেন যারা SSC বাউবিতে অতপর HSC অন্য কোন বোর্ডে কিংবা বাউবিতে করেছেন। অথবা SSC অন্য কোন শিক্ষা বোর্ডে কিংবা HSC বাউবি হতে করেছেন তারাও শর্ত ও যোগ্যতা থাকলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি-কেসরকারি কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। আসলে বাউবির এমন অনেক Student আছেন যারা নিজ মেধা ও যোগ্যতা বলে অলরেডি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত বিভিন্ন কলেজে হতে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং অনেকেই সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে কর্মরত আছেন। সুতরাং আপনার মনে জেদ, প্রতিভা, ধৈর্য্, পরিশ্রম ও পড়াশোনার করার ইচ্ছা থাকলেও আপনিও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন যে কোন কলেজে স্নাতক সম্মান কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা রাখতে পারেন।
দৃষ্টি আকর্ষণঃ
- বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজ সমূহ এবং ০৭ কলেজে চান্স পেতে হলে অবশ্যই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হতে হয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া লাগেনা। যার স্কোর যত তার সেই কলেজে চান্স পাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অর্থাৎ বিগত পাশের ফলাফলের উপর স্কোর নিয়ে প্রতিটি কলেজে আলাদাভাবে মেধা তালিকা অনুযায়ী আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।
- তবে সরকারি কলেজে গুলোতে পড়াশোনার খরচ নামমাত্র হওয়ার কারনে সেখানে ভর্তি ইচ্ছুক প্রার্থীদের সংখ্যা বেশি থাকে। যখন জাতীয়র অধীন সরকারি কলেজে কোন কারনে চান্স হয়না তখন শেষ ভরসা থাকে বেসরকারি কলেজ গুলো। তবে এই কথা নিশ্চিত যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আপনার আবেদনের যোগ্যতা/স্কোর থাকলে বাংলাদেশের যে কোন কলেজে (সরকারি কিংবা বেসরকারি হোক) ভর্তি হতে পারবেন, অনার্স মিসটেক করার ভয় থাকবেনা।
- আরেকটি বিষয় যেহেতু সরকারি কলেজ গুলোতে বেশি চাপ থাকে সেই কারনে বেসরকারি অধিকাংশ কলেজগুলোতেই প্রতি বছরে অর্ধেক আসন ফাঁকা থেকে যায়। আবার অনেক বেসরকারি কলেজগুলো মাইকিং করেও শিক্ষার্থী খুঁজে পায়না।
ভর্তি টাইম লাইন : |
---|
|
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজে অনার্স ভর্তির যোগ্যতা:
অনার্স ভর্তির নূন্যতম যোগ্যতা: |
---|
|
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সরকারি-বেসরকারি কলেজে পড়ার খরচের তথ্যাবলী:
- জেনারেল অনার্স সব যায়গায় পড়ানো হয়। সারা বাংলাদেশে প্রায় ২ হাজারের বেশী সরকারি বেসরকারি কলেজ রয়েছে যার মধ্যে ৭৭০+ কলেজে জেনারেল অনার্স পড়ানো হয়। জেনারেল অনার্সে সরকারি কলেজে ৪ বছরে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকার মতো, বেসরকারী কলেজে ৪ বছরে খরচ হয় ৮০ হাজার-১ লাখ ২০ হাজারের মতো। মূলত সরকারি কলেজগুলোতে টিউশন ফিসহ বছরে ৬০০০/- টাকা করে দিতে হয়। কিন্তু বেসরকারি কলেজে গুলোতে প্রতি মাসে মাসিক ফি+ টিউশন ফি থাকে ফলে বছরে ১৫-২০/- হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে যায়। যেমন: ভর্তি হওয়ার সময় সরকারি কলেজগুলোতে লাগে ৪,৫০০/- টাকা অপরদিকে বেসরকারি কলেজ গুলোতে ভর্তি ফি লাগে ১৫-২০ হাজার টাকা।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধীন কলেজ গুলোতে ভর্তির আবেদন পদ্ধতি:
আবেদনকারীকে অবশ্যই অনলাইনে আবেদন করতে হবে । অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়াটি নিচে দেখানো হল:
- কিভাবে আবেদন করতে হবে, তার নির্দেশিকা পিডিএফ ফাইলটি ওপেন করুন ও পড়ুন এখানে
- সর্বপ্রথম প্রার্থীকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট http://app1.nu.edu.bd/ তে প্রবেশ করতে হবে ।
- নিচের মত উইন্ডো আসবে। সেখানে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার পাশের সাল, বোর্ড, রেজিঃ নম্বর ও রোল নম্বর ইনপুট করে নেক্সট অপশনে ক্লিক করতে হবে।
- ৩য় অপশনে গেলে যে কলেজে ভর্তি হতে চান সেটি সিলেক্ট করলে উক্ত কলেজের বিষয়গুলোর তালিকা দেখাবে। সেটি নির্বাচন করুন
- ৪র্থ অপশনে কোটা থাকলে কোটা নির্বাচন করতে হবে> না থাকলে দেওয়ার প্রয়োজন নাই। অতপর ৫ম অপশনে ছবি আপলোড দিতে হবে এবং মোবাইল নং সংযুক্ত করতে হবে।
- সবশেষে সাবমিট করার পর একটি পিডিএফ ফর্ম আসবে। সেটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিয়ে স্বাক্ষর করে ফি জমা করার সাথে কলেজে জমা দিতে হবে। কলেজ অংশটি কলেজ কর্তৃপক্ষ রেখে অপর অংশটি শিক্ষার্থীর কাছে দিবে। শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজের কাছে সংরক্ষিত রাখবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ভর্তি বিজ্ঞপ্তির ফলাফল জানা ও দেখা:
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ভর্তির ফলাফল (১ম ও ২য় মেধাতালিকা) প্রকাশিত হয়। প্রাথমিক আবেদন শেষ হওয়ার ৩-৪ দিন পর ভর্তি রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। তবে ফলাফল কয়েকটি ধাপে প্রকাশ করা হয়। মেধাতালিকায় যার পয়েন্ট বেশি থাকবে সেই ১ম মেরিটে ভর্তির সুযোগ পাবে।
- তবে কেউ ১ম মেধাতালিকায় চান্স না পেলে তার জন্য (আসন খালি থাকা সাপেক্ষে) ১ম মাইগ্রেশন ও ২য় মেধা তালিকা এবং রিলিজ স্লিপ রেজাল্ট এর সুযোগ থাকবে। মেধা তালিকাতে আসলে আবেদনের রোল নং ও পিন নং দিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটে লগইন করে ভর্তি ফরম পূরণ করতে হবে।
অনার্স ভর্তি হতে যেসব কাগজপত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজে জমা দিতে হবে:
একেক কলেজ একেক ধরণের কাগজপত্র গ্রহন করে। তবে নিম্নে দেওয়া ১ থেকে ৪ পর্যন্ত কাগজপত্র গুলো সবারই লাগবে। বাকিগুলো কলেজভেদে লাগবে। তাই আপনি যে কলেজে ভর্তি হবেন সে কলেজের ভর্তি বিজ্ঞপ্তিটি দেখবেন, তাহলে বুঝে যাবেন মোট কতটি কাগজপত্র আপনাকে জমা দিতে হবে।
- অনলাইনে পূরণকৃত ভর্তি ফরম – ২ কপি। (একটি কলেজ কপি এবং অন্যটি স্টুডেন্ট কপি)
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি ৪ টি এবং পেছনে নাম লিখে দিতে হবে। (কলেজ ভেদে কম বেশি হতে পারে)
- SSC বা সমমান পরীক্ষার নম্বরপত্র বা মার্কশিট – মূলকপি সহ ফটোকপি ২ টি
- HSC বা সমমান পরীক্ষার নম্বরপত্র বা মার্কশিট – মূলকপি সহ ফটোকপি ২ টি
- SSC বা সমমান পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি – ২ কপি।
- HSC বা সমমান পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি – ২ কপি।
- HSC বা সমমান পরীক্ষার প্রশংসাপত্র – মূলকপি সহ ফটোকপি ২ টি
- পাঠ বিরতি বা শিক্ষা বিরতি সনদপত্র। (২০২২ সালে এইচএসসি পাশ করছে শুধু তাদের জন্য)
- কোটার সনদপত্র। যারা মুক্তিযোদ্ধা বা পোষ্য কোটায় আবেদন করছেন তাদের জন্য প্রযোজ্য।
অনার্স ভর্তির খরচ কত?
যদি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি কোনো কলেজে ভর্তি হোন তাহলে সর্বনিম্ন ৪০০০/- টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০০০/- টাকা লাগবে আর যদি কোনো বেসরকারি কলেজে ভর্তি হতে চান তাহলে সর্বনিম্ন ৭০০০/- টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০,০০০/- টাকা লাগতে পারে।
সর্বশেষ:
পোস্টের একদম শেষ পর্যায়ে। উপরোক্ত আলোচনা অনুযায়ী আশা করি বুঝতে পেরেছেন জাতীয় অধিভূক্ত কলেজে ভর্তির আবেদনের যোগ্যতা আপনার আছে কিনা! কোন কলেজে অনার্স করা যাবে, সুযোগ সুবিধা ও পড়াশোনার খরচ কত হবে তার তথ্যাদি। তাছাড়া নিজেই নিজের আবেদন ফর্ম পূরন করতে পারবেন যদি নিজের পিসি কিংবা ল্যাপটপ থাকে। তারপরেও কোন ফর্ম পূরন করতে বুঝতে অসুবিধা হলে আমাদেরকে কমেন্ট করতে পারেন, সাধ্যমত আপনাকে সমাধান দিবো। এখনি লেখাপড়াতে আপনারা একটু সিরিয়াস হোন যেহেতু হাতে সময় কম । পরিশেষে যারা সরকারি-বেসরকারি কলেজে ভর্তিচ্ছুক প্রার্থী সবাইকে শুভ কামনা ও অভিবাদন জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য আমাদের ব্লগ সাইট ভিজিট করতে ব্রাউজারের সার্চবার কিংবা গুগলে গিয়ে পিয়নমামা ডটকম কিংবা PeonMama লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। তাছাড়া ওয়েব সাইটে ভিজিট করে ক্যাটাগরি/লিস্টের তালিকা হতে পচ্ছন্দসই পোস্ট বাছাই করতে পারবেন।আরেকটি বিষয়, পিয়নমামা ডটকম সাইটে শুধু লেখাপড়া বিষয়ক নই পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে চাকরির বিজ্ঞপ্তি, কম্পিউটার টিপস, অনলাইনে ইনকামের কৌশল, ফ্রিল্যান্স, ক্যারিয়ার আড্ডা, সফটওয়্যার রিভিউ ও ই-কমার্স নিয়ে পোস্ট পাবলিশ করা হবে।
Ami nu 2022-2023 admision circular full poreci.Age 32 years, BOU HSC pass kore ki circular er pass er year er joggota thaka sapekke national university te apply /admission neya jay. Mane age. 32 eta kono problem hobe kina apply/admision er ketre. Thank you very much.
প্রথমত কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে। জ্বী ভাই, আপনি যদি এই বছর (২০২২) সালে বাউবি থেকে এইচএসসি পাশ করে থাকেন এবং এই প্রতিবেদনের উপরোক্ত তথ্যানুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় স্কোর/শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই অনার্স ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। বর্ত মানে বয়সের কোন সমস্যা/প্রতিব্ধকতা নাই।
আমি এ বছর উন্মুক্ত থেকে HSC পাশ করেছি। আমি কি ঢাবি তে আবেদন করতে পারবো ?