এসএসসি ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি ২০২৪ :: কোনটি ভালো কারিগরি নাকি বাউবি?
আসসালামু আলাইকুম। পিয়নমামা ডটকম সাইটের ভিজিটর বন্ধুদের সালাম ও ঈদের শুভেচ্ছা, ঈদ মোবারক। আশা করি, পরিবার পরিজন নিয়ে সবাই ভালো আছেন। আপনারা অনেকেই কনফিশনে পড়েন কিংবা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না কারিগরির ভোকেশনাল কোর্স এবং বাউবির এস.এস.সি প্রোগ্রাম কি? কোনটির কোন সুবিধা-অসুবিধা আছে এবং আপনার জন্য ভালো হবে কোনটা এই সকল খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ভিজিটর বন্ধুদের মনের সংশয় দূর করাটাই আজকের পোস্টের প্রধান উদ্দেশ্য। অবশ্য কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ভোকেশনাল কোর্স এবং বাউবির এসএসসি প্রোগ্রাম বিষয়ে আমাদের ব্লগে এই বিষয়ে একটি পোস্ট পাবলিশ করেছিলাম এখানে
এস.এস.সি (৯ম-১০ম শ্রেণি) কোর্সে ভর্তি হতে আগ্রহী শিক্ষার্থীগণ কোথা হতে শুরু করবেন?
জ্বী যারা বয়স্ক, লেখাপড়াতে বিরতি দিয়ে নতুন করে শুরু করতে চান বিশেষত এসএসসি কোর্সে ভর্তি হতে চান তাদের জন্য দুটি পথ খোলা আছে যথারুপঃ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের এসএসসি ভোকেশনাল কোর্স এবং অপরটি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন (বাউবি) এসএসসি প্রোগ্রাম।
এস.এস.সি কোর্সে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা
যারা ইতপূর্বে ৮ম শ্রেণি পাস করেছেন বিশেষত ২০০৯ ইং সালের পূর্বে কিংবা জেএসসি পাস করার পর ০৩ বছরের মধ্যে কোথাও ৯ম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারে নাই নাই সেইসব শিক্ষার্থীগণ উপরোক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নতুন করে এসএসসি কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। এখানে বয়সের কোন বাধ্যবাধকতা নাই। অপরদিকে আপনার হাজার ইচ্ছা থাকা স্বত্তেও জেনারেল শিক্ষাবোর্ড তথা ঢাকা, যশোর, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কোথাও কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারবেন না। এটা অবশ্য যে কোন বয়সের লোক ২০০৭ সালের পূর্বে জেনারেল শিক্ষাবোর্ড হতে এসএসসি পরীক্ষাতে অংশগ্রহন করতে পারতো। মূলত এটার নাম ছিলো প্রাইভেট এসএসসি। বর্তমানে প্রাইভেট এসএসসি বিলুপ্ত করা হয়েছে তবে প্রাইভেট এইচএসসি চালু আছে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এসএসসি প্রোগ্রামে নতুন করে লেখাপড়া শুরু করতে চাইলে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের ভোকেশনাল কিংবা বাউবি ছাড়া বিকল্প পথ নাই।
এস.এস.সি ভোকেশনাল কোর্স কি?
জেনারেল শিক্ষাবোর্ডের মতই কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরিচালিত ৯ম ও ১০ম শ্রেণিসহ ০২ বছর পড়াশোনা শেষ করে সনদ অর্জন করাই হলো এসএসসি ভোকেশনাল। উল্লেখ্য এসএসসি ভোকেশনাল কোর্সে সাইন্স ব্যতিত অন্য কোন গ্রুপ বিভাগ নাই। এই সাইন্স কোর্স/ট্রেডের আবার ২০ টির অধিক শাখা রয়েছে যেমনঃ কম্পিউটার, কৃষি, ইলেকট্রনিক্স, মেকানিক্স, ড্রেস মেকিং ইত্যাদি। এখানে ভর্তি হওয়ার সময় যে কোন একটি ট্রেড বাছাই করতে হয়।
ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তির যোগ্যতাঃ
- যে কোন সালের ৮ম শ্রেণি কিংবা জেএসসি পাশ হলেই হবে এবং যে কোন বয়সের শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে।
কারিগরি এস.এস.সি (ভোকেশনাল) ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির টাইম লাইন : |
---|
|
- মুল/বোর্ড পরীক্ষা পদ্ধতিঃ
বছরে ০২ বার পরীক্ষা দিতে হয় অর্থাৎ ৯ম ও ১০ম শ্রেণি আলাদাভাবে। দুটোর পরীক্ষার সমন্বয় করে মূল ফলাফল প্রকাশ ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
কারিগরী শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়ার প্রতিষ্ঠান কিভাবে চিনবেন কিংবা খুঁজবেন?
সমগ্র বাংলাদেশ কিংবা আপনার এলাকা কিংবা জেলা/উপজেলা শহরে যেখানে দেখবেন টেকনিক্যাল স্কুল কলেজ কিংবা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অথবা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট অথবা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজী শব্দের আগে-পরে অন্য কোন বাক্য/শব্দ থাকলে সেটিই ধরে নিবেন উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিছু না বুঝতে পারলে আপনি একটা কাজ করতে পারেন তাহলোঃ আপনার এলাকায় অবস্থিত কিংবা পরিচিত যে কোন জেনারেল প্রতিষ্ঠান তথা হাইস্কুলে চলে যাবেন। সেখানে শিক্ষক মহোদয়দের বললেই অনেকেই আপনাকে ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠানের ঠিকানাটা দিতে পারবে। তবে এতটুকু নিশ্চিত থাকবেন সমগ্র বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে জেলা-উপজেলা-থানা পর্যায়ে ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উদাহরন হিসেবে বলি: ভোকেশনাল প্রতিষ্ঠান নামগুলো এই ধরনের হয়ে থাকে যেমন: মাগুরা আইডিয়াল টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, সালেহা-রবিউল বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজ ইত্যাদি ....ইত্যাদি কতশত নাম। ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট ০২ ধরনের আছে তথা: সরকারি ও বেসরকারি। যারা বয়স্ক জেএসসি সনদ নাই, নিয়মিত ক্লাশ করতে পারবেন না তাদের জন্য বেসরকারি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হওয়াটা ভালো হবে। আপনাদের বুঝার সুবিধার্থে কিছু ভর্তির বিজ্ঞাপন চিত্র প্রদান করা হলো:
ভোকেশনাল কোর্সে পড়ালেখার খরচের হিসাব
কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এস.এস.সি ভোকেশনাল কোর্সে ০২ বছরে পড়াশোনা করতে ব্যায় হয় এলাকার প্রতিষ্ঠানভেদে ০৭ হাজার হতে ১০ হাজার টাকা। তবে সনদপত্রের মান এবং ভালো ফলাফলসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য অবশ্যই উন্মুক্ত হতে কারিগরী শিক্ষাবোর্ডের কোর্স করাটা অনেক ভালো হবে। কেন ভালো হবে এবং তার কারণ সমূহ এই পোস্টের সর্বশেষে আলোকপাত করবো। এবার আসি বাউবির এসএসসি প্রোগ্রাম বিষয়ে:
বাউবির এস.এস.সি প্রোগ্রাম কি?
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত তাদের আঞ্চলিক কেন্দ্র-উপআঞ্চলিক কেন্দ্রের অধীনে সমগ্র বাংলাদেশে অনুমোদিত স্টাডি সেন্টারে এসএসসি প্রোগ্রাম কোর্স চালু আছে। বাউবির এসএসসি প্রোগ্রাম জেনারেল শিক্ষাবোর্ডের মতই মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা ও বিজ্ঞান শাখাতে ভর্তি হওয়া যায়। তবে মানবিক শাখা ব্যতিত বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হতে হলে শিক্ষার্থী ঢাকা কিংবা কোন বিভাগীয় শহরের স্টাডি সেন্টার গুলোতে ভর্তি হতে হয়। বাউবি একটি দূরশিক্ষণ সরকারি প্রতিষ্ঠান যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত এবং এর অর্জিত সনদপত্রের মান সরকার স্বীকৃত। চাকুরিসহ উচ্চ শিক্ষার্থেও কাজে লাগানো যায়।
বাউবির অধীনে এস.এস.সি কোর্সে ভর্তির যোগ্যতাঃ
যে কোন সালের ৮ম শ্রেণি কিংবা জেএসসি পাশ হলেই হবে এবং যে কোন বয়সের শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারবে। বর্তমানে যাদের কোন ৮ম শ্রেণি কিংবা জেএসসির সনদ নাই তারা একটি (১০০ মার্কের) ভর্তি পরীক্ষাতে অংশ গ্রহন করে শুধুমাত্র পাশ করলেই ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে। এই ক্ষেত্রে যারা এই আবেদনপত্র জমা দিতে ইচ্ছুক, তাদেরকে বাউবি দ্বারা নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে। প্রাথমিক আবেদন ফরমের জন্য পরীক্ষার ফি হল ৩০০ টাকা, যা পরীক্ষা অংশগ্রহণের জন্য প্রদান করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার বিষয়, মানবন্টন, তারিখ এবং পরীক্ষার কেন্দ্র এবং ভর্তি প্রক্রিয়ার বিস্তারিত তথ্য বাউবি'র ওয়েবসাইট, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্র এবং স্টাডি সেন্টার থেকে জানতে পারবেন।
বাউবির এস.এস.সি কোর্সে কখন ভর্তি শুরু হয়?
প্রতি বছরের ডিসেম্বরের দিকে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে চলমান থাকে পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এটা বাউবির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হতে ফর্ম পূরন ও ফিস জমা দিয়ে ভর্তি হতে হয়। মূলত ওয়েব সাইটে তথ্য পূরন করার সময় স্টাডি সেন্টারের তালিকা গুলো দেখতে পারবেন।
এক নজরে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এস.এস.সি প্রোগ্রামে ভর্তি তথ্যের সারসংক্ষেপ
বাউবির এস.এস.সি প্রোগ্রাম ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির টাইম লাইন : |
---|
|
- মূল/বোর্ড পরীক্ষা পদ্ধতিঃ
কারিগরীর ভোকেশনাল কোর্সের মতই বছরে ০২ বার পরীক্ষা দিতে হয় অর্থাৎ ৯ম ও ১০ম শ্রেণি আলাদাভাবে। দুটোর পরীক্ষার সমন্বয় করে মূল ফলাফল প্রকাশ ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বাউবির এস.এস.সি প্রোগ্রামে শিক্ষার খরচ
বাউবিতে ০২ বছরের এসএসসি
কোর্স শেষ করতে লাগবে প্রায় ১০ হতে ১২ হাজার টাকার মত। এখানে কোন বই কেনা লাগেনা। স্টাডি
সেন্টার হতে আইডিকার্ডসহ সকল প্রকার বই ফ্রি দেওয়া হয়।
আপনার ভর্তির জন্য সেরা হবে কোনটা কারিগরির ভোকেশনাল নাকি বাউবির কোর্স?
মূলত যারা সিরিয়াসলি ভালো ফলাফল করতে চান এবং পরবর্তীতে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে চান যেমন: এসএসসি পাশ করে দেশের যে কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি কলেজ এবং এইচএসসি পাশ করে দেশের নামকরা কলেজে অনার্স কিংবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে চান তাদের জন্য নিসন্দেহে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এসএসসি কিংবা এইচএসসি ভর্তি হওয়াটা ভালো হবে। তার যুক্তিগুলো নিচে প্রদান করছি। আর যাদের শুধুমাত্র সনদপত্র নামে নেওয়া নামমাত্র পাশ বলা অন্য কোন স্বপ্ন পূরনের উদ্দেশ্য নাই তারা বাউবিতে ভর্তি হতে পারেন। তবে আমি আবারও বলছি বাউবিতে ভর্তি না হওয়াটাই ভালো হবে তার কারনগুলোতো উপরের পয়েন্টে আলোচনা করেছি। তাছাড়াও-
- কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধিনে এসএসসি কিংবা এইচএসসি কোর্সে যে কোন বয়সেই ভর্তি হওয়া যায়। যে কোন সালের ৮ম শ্রেণি/জেএসসি/জেডিসি পাশ হলেই হবে।
- আপনার এলাকাতে যেখানে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট কলেজে নামে প্রতিষ্ঠান আছে সেখানে ভর্তি হতে পারবেন।
- উন্মুক্তের এসএসসি প্রোগ্রাম হতে কারিগরীর এসএসসি প্রোগ্রামে ফলাফল ও জিপিএ অনেক ভালো ওঠে যা আপনাকে পরবর্তী শিক্ষা প্রোগ্রামে ভর্তি হতে সহায়ক হবে। মূলত কারিগরির এসএসসি প্রোগ্রামে প্রতিটা বিষয় বোর্ডে ৬০ মার্কের পরীক্ষা দিতে হয় এবং ৪০ মার্ক ব্যবহারিক থাকে যেখানে প্রতিষ্ঠানের স্যারের ৪০ এর মধ্য ৩৩ থেকে ৪০ মার্কই দিয়ে থাকে।
- সুতরাং আপনি যদি এখানে একদমই পড়াশোনা নাও করে থাকেন তাহলে নিশ্চিত বি কিংবা এ মাইনাস গ্রেড পাবেন যেখানে বাউবিতে কোনভাবেই সম্ভব নই। তাছাড়া একটু মনোযোগ কিংবা নিয়মিত ক্লাশ করলে অনায়াসেই এ কিংবা এ+ গ্রেড অর্জন করা যায়।
- কারিগরিতেও নিয়মিত ক্লাশের কথা বললেও কিছুটা শিথিল আছে। এখানে ব্যবহারিক পড়াগুলো আপনাকে আনন্দ দিবে, অনুপ্রেরণা জুগাবে, নিজের স্কীল ডেভেলপ করতে পারবেন।
সর্বশেষঃ
উল্লেখ্য আমাদের ব্লগ সাইট ভিজিট করতে ব্রাউজারের সার্চবার কিংবা গুগলে গিয়ে পিয়নমামা ডটকম কিংবা Peon Mama লিখে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন। আরেকটি বিষয়, পিয়নমামা ডটকম সাইটে শুধু লেখাপড়া বিষয়ক নই পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে চাকরির বিজ্ঞপ্তি, কম্পিউটার টিপস, অনলাইনে ইনকামের কৌশল, ফ্রিল্যান্স, ক্যারিয়ার আড্ডা, সফটওয়্যার রিভিউ ও ই-কমার্স নিয়ে পোস্ট পাবলিশ করা হবে।
Rules for commenting: Linking comments made without any reason for the purpose of getting backlinks will not be approved. However, linking comments for reasonable reasons will be approved after verification. Moreover we always follow zero spamming policy. So Be Careful..! to the policy of according at this blog.
comment url